কখনোই ভোর আসেনি।
আসবেনা কোন দিন।
একটি শিশির স্নিগ্ধ ভোরেরের প্রত্যাশায়,
কাটিয়েছি সহস্র বিনিদ্র রজনী,কষ্টময় রাত,
খুব করে চেয়েছি বিনিদ্র রাতের সকল নিঃসঙ্গতা
জলমলে ভোরের কাছে জমা দিয়ে,
আমিও হবো ভোরের পাখি।
কখনোই ভোর আসেনি,
না শৈশবে, না যৌবনে।
পূরোটা জীবন জুড়ে কেবলই
নিঃসঙ্গ রাতের অনাকাংখিত নির্জনতা।
একটি ভোরের প্রত্যাশায় আশৈশব প্রতিক্ষা আমার।
আজো আসেনি সেই কাংখিত ভোর।
ছোট বেলায় পরনের ছেঁড়া শাড়ীর আঁছল দিয়ে
দুচোখের জল মুছে দিয়ে মা আমায় বলেছিল,
দেখিস খোকা একদিন আমাদের বাড়ীর উঠানেও
ভোরের আলো এসে দাঁড়ায়ে দোয়েল পাখির মত।
সেদিন আমাদের এই ভাঙাচোরা ঘর হবে
আলোর শহর।
এখন আমি শৈশব কৈশর ফেরিয়ে পরিনত যুবক।
আমাদের বাড়ীর চারপাশের বাগানের বুক ফুঁড়ে
গড়ে উঠেছে সু-উচ্চ দালান, বাহারী পাথর শহর,
এখনো আসেনি সেই কাংখিত ভোর।
চারিদিকে নিকোষ কালো আঁধার,
কোথাও নেই এতটুকু আলো।
বরং আদের সেই ভাঙ্গা ঘরের পূরনো চালের
ফুঁটোয় তাকিয়ে দেখি,,
নিকোষ কালো রাত গিলে খাচ্ছে
আমার স্বপ্নময় ভোরের সবটুকু আলো।
ঘরের বেড়ার ফাঁক দিয়ে তাকিয়ে দেখি
মায়ের কবর জুড়ে কেবলই আঁধার,
অনাকংখিত আগাছায় ঢেকে গেছে বুকের শহর।
যৌবনে একজন আমায় বলেছিল,
সে আমার ভোরের আলো হবে।
আমিও আশ্বাসে পরম বিশ্বাস করে,
তাকেই ভেবেছি আমার ভোরের আলো,
জ্যোৎস্নার ফুল,রাতের শষি।
কিন্তু হায়! অবাক বিষ্ময়ে তাকিয়ে দেখি,
যাকে আমি আলো ভেবে জড়াতে চেয়েছি জীবনে,
সে আসলে আলো নয়, আলেয়া।
সে এখন বেগানা পুরুষের বুকে কামনার ফুল,
জ্যোৎস্নাময় রাত,ভোরের শিশির।
আমার বুকজুড়ে রাতের আঁধার,
অচেনা অন্ধকার।
এতদিনে আমিও জেনে গেছি,
এজীবনে কখনোই ছিলোনা ভোর,
আসবেনা কোন দিন।